বাদা বন ক্লান্তিহীন ভ্রমণের আনন্দ দেয়। নিশ্চুপ সৌন্দর্যে বনের নিজস্ব ভাষা আমাকে মুগ্ধ করে। এই বন্য জীবনের মায়ায় পড়ে পর্যটন শ্রমিক হিসেবেই আমি গর্ববোধ করছি। যন্ত্রণা অনুভব করি বাদায় ভ্রমণে মনুষ্য কোলাহল ।
নিশ্চুপ থেকে বন্য ভাষা শ্রবণের যে শান্তি তা যাত্রিক শহরে বসে পাওয়া অবাস্তব।
আপনার কন্ঠ যদি বাদায় বিশ্রামে পাঠান খাল- নদী বা জঙ্গল পরিভ্রমণের সময়ে আপনার শ্রবণযন্ত্র নিদারুণ আনন্দলাভ করবে। হইচই-গল্পের সুযোগ রয়েছে আপনার শহরে, এসেছেন আপনি স্রস্টার অপরূপ সুন্দর সৃষ্টি এই বিশ্ব জাহানের সর্ববৃহৎ শ্বাসমূলীয় বনে, এই বন আপনাকে অনেক কিছু দিতে চাইছে।
উপলব্ধি করুন আশ্চর্য ভয়ংকর সুন্দর বাংলার বাঘের আবাসস্থলে আপনি রয়েছেন৷ ঘন জঙ্গলে নিজেকে লুকিয়ে রেখে হঠাৎ শিকারে অভস্ত বাংলার ডোরাকাটা এই বাঘ দেখা নিদারুণ ভাগ্যের ব্যাপার হলেও তার উপস্থিতি অনুভবে আনতে পারবেন আপনার কন্ঠস্বর ব্যাবহারে বিরত থেকে। ঘন গড়ান, গেওয়া, কেওড়া, সুন্দরী সহ অসংখ্য শ্বাসমূলিয় গাছের মাঝে চমৎকার বন্য জীবন টিকে রয়েছে হাজার বছর ধরে।
আমরা সকলেই সুরে থাকি মুগ্ধতায়, আমার মনে হয় মানুষ সেই সুরের ধরনা পেয়েছে পাখিকূলের কাছ থেকে। মনুষ্য সৃষ্ট শব্দ মুক্ত সুন্দরবনে পাখিদের যে সুরের মূর্ছনা আপনি শুনতে পাবেন তাতে আপনার মনোনানন্দ পূর্ণতা পাবে নিশ্চিত করে বলতে পারি৷
চিত্রল হরিণ মায়াবী চোখে নিশ্চিত মনে বিচরণ করবে যতক্ষণ না আপনি আপনার বিরক্তিকর কন্ঠ চালিত করবেন। বানর দল গাছে চড়ে আপনাকে দেখবে তবে আপনার শব্দচয়নে সেও বিরক্তি প্রকাশ করবে৷ শীতের রোদে ভাটির যে চর দেখা যায় সেখানে নোনা জলের কুমির প্রাই দেখা মেলে তাও ঝুপ হারিয়ে যায় মনুষ্য শব্দে।
সুন্দরবন নিশ্চুপ সৌন্দর্যের বন, সুন্দরবন বিশুদ্ধ নিঃশ্বাসের বন, সুন্দরবন সবুজের আরাম ছোঁয়া, চোখে ধারণ করার বন। সুন্দরবন নোনা জলে জেগে উঠা বিস্তীর্ণ এক জনপদের রক্ষাকবচ, স্রস্টার এক চমৎকার অনুগ্রহ।
[ফেসবুক গ্রুপ BD Sundarbans থেকে নেয়া]