৯৭টি তেজস কিনছে ভারত, সময় মতো হাতে পাওয়া নিয়ে সন্দেহ

৯৭টি তেজস কিনছে ভারত, সময় মতো হাতে পাওয়া নিয়ে সন্দেহ

ভারতীয় বিমান বাহিনীর হাতে তেজস যুদ্ধবিমানের নতুন সংস্করণ তুলে দিতে উদ্যোগী হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হিন্দুস্থান অ্যারোনটিকস লিমিটেড’(হ্যাল)-এর সঙ্গে ৬৭ হাজার ৩৭০ কোটি টাকার চুক্তি করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। চুক্তি অনুযায়ী, বিমান বাহিনীকে ৪.৫ প্রজন্মের ৯৭টি হালকা ‘মাল্টি রোল সুপারসনিক’ যুদ্ধবিমান ‘তেজস মার্ক-১এ’ সরবরাহ করবে হ্যাল। টাকার অংকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ইতিহাসে এটিই বৃহত্তম ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ চুক্তি।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় বিমান বাহিনীকে ৬৮টি এক আসনের যুদ্ধবিমান, ২৯টি দু’আসনের প্রশিক্ষণ বিমান এবং সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম-সহ ‘তেজস মার্ক-১এ’ সরবরাহ করবে হ্যাল। ২০২৭-২৮ থেকে সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা। ছ’বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন হবে।

যদিও ইতিহাস বলছে, চুক্তির সময়সীমা মেনে চলার ক্ষেত্রে হ্যালের নজির ভাল নয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ‘তেজস মার্ক-১’ ফাইটার জেটের দু’আসন বিশিষ্ট নয়া প্রশিক্ষণ সংস্করণটি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়েছিল বিমান বাহিনীর হাতে। কিন্তু ২০২১ সালের ৪৬৮৯৮ কোটি টাকার প্রথম বরাতের ৮৩টি যুদ্ধবিমানের মধ্যে এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়েছে মাত্র ১০টি। তেজস যুদ্ধবিমান সময়মতো সরবরাহ করতে ‘হ্যাল’ ব্যর্থ হয়েছে বলে কয়েক মাস আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিংহ।

গত জুনে হ্যালের চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডিকে সুনীল তেজস সরবরাহে বিলম্বের জন্য আমেরিকার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন। তিনি জানান, ওই যুদ্ধবিমানের এফ৪০৪ ইঞ্জিন সরবরাহকারী মার্কিন সংস্থা ‘জিই অ্যারোস্পেস’-এর দেরির কারণেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানগুলি পৌঁছে দিতে দেরি হচ্ছে তাঁদের।

প্রসঙ্গত, ছ’দশক একটানা সার্ভিস দিয়ে চলতি সপ্তাহে অবসর নিয়েছে রুশ প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতীয় বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান মিগ-২১। ভারতীয় বিমান বাহিনীর হাতে আপাতত যে যুদ্ধবিমান বহর রয়েছে, তার মধ্যে তেজস মার্ক-১, রাফাল এবং সুখোই-৩০ এবং মিগ-২৯ অন্যতম।

২০৩১ সালের মধ্যে যুদ্ধবিমান বহর সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। এ ক্ষেত্রে মোদীর ‘আত্মনির্ভরতা’র স্লোগান অনুসরণ করে মিগ-২১-এর পরিবর্ত হবে ‘তেজস মার্ক-১এ’। কিন্তু সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন ‘সময়সীমা’ নিয়ে।

হালকা ওজনের, ‘মাল্টি রোল সুপারসনিক’ যুদ্ধবিমান তেজস নানা ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম। এর ৬৫ শতাংশেরও বেশি যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম ভারতীয় সংস্থার তৈরি। পরবর্তী ধাপে তেজস ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে নৌসেনারও।

আনন্দবাজার