ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে শীর্ষ পর্যায়ের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক করেছেন, যার নাম ‘কম্বাইন্ড কমান্ডার্স কনফারেন্স’। প্রধানমন্ত্রীর এই কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক স্বাভাবিক হলেও এবারের বৈঠকের গুরুত্ব বেড়ে যায় অন্য কারণে।
রোববার আসামে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের সীমান্তসংলগ্ন অঞ্চলে জনবিন্যাস পরিবর্তন করার যে চেষ্টা চলছে, তা রুখতে বিশেষ পরিকল্পনা নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংঘাতের পর এটি ছিল প্রথম ‘কম্বাইন্ড কমান্ডার্স কনফারেন্স’। এ বৈঠকের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার সেটাও একটা কারণ।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ছাড়াও এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, তিনটি কমান্ডের সার্বিক প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান, প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশকুমার সিং এবং তিনটি কমান্ডের প্রধানেরা।
বৈঠকে নির্দিষ্টভাবে কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতের প্রচারমাধ্যমে জানানো হয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানে হামলার পরবর্তী পর্যায়ে কী ধরনের প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রস্তুতি ভারতের রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা এ বৈঠকের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। ধরে নেওয়া হচ্ছে, সীমান্ত সুরক্ষার প্রশ্নটি নিয়ে এ বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
এমনটা যে হতে পারে, সেটির ইঙ্গিত রোববার প্রধানমন্ত্রী নিজেই দিয়েছিলেন। আসামের দারাং জেলার মঙ্গলদৈতে এদিন তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের ব্যবহার করে জনবিন্যাস পাল্টে দেওয়ার একটা চক্রান্ত চলছে। প্রধানত সীমান্ত অঞ্চল এর ফলে প্রভাবিত। এটা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটা বড় বিপদ। এ কারণে জনবিন্যাসের কথা মাথায় রেখে একটা সার্বিক পরিকল্পনা করা দরকার।
নরেন্দ্র মোদি এ পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করে বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারীরা স্থায়ীভাবে ভারতে বসবাস করুক এবং এই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করুক, এটাই চেয়েছিল কংগ্রেস। কংগ্রেস আমাদের কৃষক, আদিবাসীদের জমি এবং উপাসনালয় দখলের লক্ষ্যে প্রচার করে গেছে। আসামের বিভিন্ন অঞ্চল দখলমুক্ত করে সেই পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে বিজেপি।’
মোদির ভাষায়, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার অধীন অনুপ্রবেশকারীদের দখল করা লাখ লাখ বিঘা জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কয়েক মাস ধরে আসামে বড় ধরনের উচ্ছেদ অভিযান চলছে। ফলে বাড়িঘর ও সম্পত্তি হারিয়েছেন মূলত বাঙালি মুসলিমরা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযান চলে, যাকে সমর্থন করলেন বিজেপিদলীয় কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রী।
আসামে আগামী বছরের নির্বাচনের আগে অনুপ্রবেশ ও উচ্ছেদের মতো বিষয়কে সামনে রেখে বিজেপি নির্বাচনে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রথম আলো