জান্তা সেনা এবং জাতিগত আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে রাখাইন রাজ্যের কিয়াকফিউ নগরীতে দুর্ভিক্ষের আলামত দেখা দিয়েছে। খাদ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ৫০ কেজি চালের বস্তার দাম প্রায় ৫,০০,০০০ কিয়াট বা প্রায় ১১০ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
২০২৪ সালের গোড়ার দিকে সরকারি বাহিনী শহরটি অবরোধ করে। তখন থেকে শুধুমাত্র সামরিক বাহিনীর পণ্যবাহী জাহাজগুলো বাইরে থেকে চাল, খাদ্য এবং জ্বালানি নিয়ে আসছিল। ফলে বাসিন্দাদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য এই চালানের উপর পুরোপুরি নির্ভর করতে হয়।
কিন্তু যুদ্ধ তীব্র হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পণ্যবাহী জাহাজ আসা বন্ধ হয়ে গেছে।
দ্য ইরাবতী পত্রিকা জানায়, গত এক মাস ধরে চালের ঘাটতি এবং দাম বৃদ্ধির ঘটনা ঘটছে। সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে, এক লিটার রান্নার তেল প্রায় ২০,০০০ কিয়াত, একটি ডিম ১,৮০০ কিয়াত এবং এক ভিস বা ১.৬ কেজি পেঁয়াজ ১০,০০০ কিয়াতেরও বেশি।
কিয়াকফিউর এক বাসিন্দা বলেন, চাল অত্যন্ত দুর্লভ—আপনি এটি কিনতেও পারবেন না। যা আছে মানুষ তা রেশনিং করছে। দিনমজুরদের পক্ষে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া। গ্রাম থেকে কোনও চাল আসছে না এবং সামরিক পণ্যবাহী জাহাজও দীর্ঘদিন ধরে আসেনি।
কিছু নিম্ন আয়ের এবং দিনমজুররা কনজি (এক ধরনের জাউ ভাত) খেয়ে দির পার করছেন, যা সাধারণত নিম্নমানের বা ভাঙা চাল দিয়ে তৈরি।
একজন স্থানীয় মহিলা বলেন, কিছু লোক এখনও চাল কিনতে পারছে, কিন্তু অনেকেই ক্ষুধার্ত, সবাই রেশনিং করছে। কেউ কনজি খায়, কেউ দিনে মাত্র একবার খায় এবং কাউকে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে চাল ভিক্ষা করতে হয়।
সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, সরকার কয়েক মাস ধরে দানিয়াওয়াদ্দি নৌঘাঁটিসহ নিজস্ব ঘাঁটিতে প্রচুর পরিমাণে চাল এবং খাদ্য সরবরাহ মজুদ করছে।