জাতিগত সহিংসতায় বিপর্যস্ত উত্তর ভারতের রাজ্য মণিপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। চরমপন্থী একটি গোষ্ঠীর কয়েক সদস্যকে গ্রেপ্তারের ঘটনার পর এ বিক্ষোভ শুরু হয়। আর ঘটনার পর রাজ্য সরকার ইন্টারনেট বন্ধ ও কারফিউ জারি করেছে বলে আজ রোববার (৮ জুন) পুলিশ জানিয়েছে। এএফপি
উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্যে দুই বছরের বেশি সময় ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু মেইতেই ও প্রধানত খ্রিষ্টান কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে একের পর এক সহিংস সংঘর্ষ হয়ে আসছে। এসব সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ২৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।
সর্বশেষ সহিংসতা শুরু হয় গতকাল শনিবার। চরমপন্থী মেইতেই গোষ্ঠী ‘আরামবাই তেংগোল’-এর পাঁচ সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ার খবরের পরই এ সংঘর্ষ শুরু হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে একজন কমান্ডারও রয়েছেন।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা তাঁদের মুক্তির দাবিতে এক পুলিশ পোস্টে হামলা চালান, একটি বাসে আগুন লাগান এবং ইম্ফলের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন।
মণিপুর পুলিশ ইম্ফল পশ্চিম, বিষ্ণুপুরসহ পাঁচটি জেলায় কারফিউ জারি করেছে ‘বিপজ্জনক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির’ কারণে।
পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে, এ নির্দেশনার সঙ্গে সহযোগিতা করুন।’
আরামবাই তেংগোলের বিরুদ্ধে কুকি সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ আছে। এ ঘটনার পর তারা উপত্যকার জেলাগুলোয় ১০ দিনের ‘বন্ধ্’ ঘোষণা করেছে।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তপ্ত জেলাগুলোয় পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট ও মোবাইল ডেটা পরিষেবা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
২০২৩ সালে সহিংসতার সূচনালগ্নে মণিপুরে মাসের পর মাস ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। ওই সময় সরকারি হিসাবে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন।
আজও হাজার হাজার মানুষ চলমান সংঘাতের কারণে ঘরে ফিরতে পারছেন না।
মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিরোধের মূল কারণ হলো জমি ও সরকারি চাকরিসংক্রান্ত বিষয়।
মানবাধিকারকর্মীরা অভিযোগ করছেন, স্থানীয় নেতারা রাজনৈতিক স্বার্থে জাতিগত বিভাজনকে আরও উসকে দিচ্ছেন।