মিয়ানমারে জান্তার বিরুদ্ধে জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর লড়াই নতুন পর্বে প্রবেশ করেছে। জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ড্রোন ব্যবহারে সাফল্যের খবর দিয়েছে কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ)। ড্রোন হামলা চালিয়ে জান্তা বাহিনীর একটি পরিবহন হেলিকপ্টার ধ্বংসের দাবি করেছে তারা। কাচিন রাজ্যে এই ঘটনা ঘটে।
হেলিকপ্টারটি শোয়েগু শহরে পদাতিক ব্যাটালিয়ন ৫৬-এর সদর দপ্তরের কাছে একটি ফুটবল মাঠে অবস্থান করছিল। ড্রোন থেকে বোমা হামলা চালিয়ে এটি ধ্বংস করা হয়েছে বলে কেআইএ-এর মুখপাত্র কর্নেল নাও বু সংবাদ মাধ্যম ইরাবতীকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “ড্রোন দিয়ে ভূমির কাছাকাছি থাকা একটি হেলিকপ্টারে বোমা হামলা চালানো হয়।”
মঙ্গলবার (২০ মে) ভামোতে জান্তার ২১তম সামরিক অপারেশন কমান্ড (এমওসি) সদর দপ্তরের শক্তিবৃদ্ধি এবং সরবরাহ পৌছানোর কাজে ব্যবহৃত তিনটি হেলিকপ্টারের ওপর প্রতিরোধ বাহিনীর হামলার খবর দিয়েছিলেন কর্নেল নাও বু। তিনি জানান, তিনটি মধ্যে দুটি হেলিকপ্টার রকেট ও ড্রোন হামলায় ধ্বংস হয়েছে। হেলিকপ্টারগুলো জান্তা বাহিনীর শক্তিবৃদ্ধির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রতিরোধ বাহিনীর রকেট একটি হেলিকপ্টারের রোটরে আঘাত হানে। দ্বিতীয় আরেকটি ভিডিওতে হেলিকপ্টারের রোটর ব্লেডে ড্রোন আছড়ে পড়তে দেখা যায়।
একটি হেলিকপ্টার শোয়েগু থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়। আরেকটি শোয়েগুতে জরুরি অবতরনের পর ড্রোন হামলায় ধ্বংস হয়। তৃতীয়টি কাচিন রাজ্যের রাজধানী মিটকিনায় তাদের ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
কেআইএ সৈন্যরা বনে হেলিকপ্টারের পোড়া ধ্বংসাবশেষ এবং এর কাছাকাছি এক অফিসারের লাশ পেয়েছে বলে জানা গেছে।
কেআইএ’র এক সেনা ইরাবতীকে জানিয়েছেন যে তারা ধ্বংসাবশের কাছাকাছি ১৪টি অস্ত্রসহ ১৯টি লাশ খুঁজে পান। এদের মধ্যে একজনের নাম ক্যাপ্টেন মিও থেত অং। অন্য লাশগুলো পুড়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত কেআইএ জান্তার পাঁচটি সামরিক বিমান ধ্বংসের দাবি করে।
২০২১ সালের মে মাসে, কেআইএ মোমাউক টাউনশিপে একটি এমআই-৩৫ এ্যাটাক হেলিকপ্টার ভূপাতিত করে। গত বছরের জানুয়ারিতে, ওয়েইংমাউ টাউনশিপে একটি এমআই-১৭ পরিবহন হেলিকপ্টার এবং উত্তর শান রাজ্যের কুটকাই টাউনশিপে একটি এফটিসি-২০০০ জেট ফাইটার ধ্বংস করে।
কাচিন রাজ্যের দ্বিতীয় শহর ভামোর দখল নিয়ে গত ডিসেম্বর থেকে প্রতিরোধ সেনা ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে।
কেআইএ এবং তার মিত্ররা ভামোর বেশিরভাগ অংশ দখল করে নিলেও জান্তা সরকারের বিমান সহায়তার কারণে এমওসি ২১ সদর দপ্তর এখনো টিকে আছে।