ভারতের বিরুদ্ধে ফের সশস্ত্র প্রতিরোধের হুমকি নাগা কাউন্সিলের

ভারতের বিরুদ্ধে ফের সশস্ত্র প্রতিরোধের হুমকি নাগা কাউন্সিলের
ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিল অফ নাগাল্যান্ড-ইসাক মুইভা (এনএসসিএন-আইএম) এর ক্যাডারদের সশস্ত্র মহড়া, ফাইল ফটো

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে ২০১৫ সালে একটি কাঠামো চুক্তি স্বাক্ষর করার পর নাগাল্যান্ডের ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিল (এনএসসিএন-আইএম) আবারো ভারতের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের হুমকি দিয়েছে। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলে যে নাগাদের জন্য আলাদা পতাকা এবং সংবিধান অন্তর্ভুক্ত করে তাদের দাবিগুলো নিস্পত্তির জন্য তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মেনে নিতে মোদি সরকার রাজি না হলে তারা সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করবে।

এনএসসিএন বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) এ বিবৃতি দেয়। এতে বলা হয়, ” হিংসাত্মক সংঘাতের সূচনা ঘটানোর জন্য ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট স্বাক্ষরিত কাঠামো চুক্তির (এফএ) চেতনাকে সম্মান না করা এবং ইচ্ছাকৃত বিশ্বাসঘাতকতা এবং প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের কারণে সম্পূর্ণরূপে ভারত এবং এর নেতৃত্ব দায়ি থাকবে।”

এনএসসিএন-এর সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান রাজনৈতিক আলোচক টি মুইভা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, “যাই ঘটুক না কেন” এনএসসিএন নাগাদের অনন্য ইতিহাস, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, অঞ্চল, পতাকা এবং সংবিধান রক্ষা করবে।

একটি সরকারী সূত্র দাবি করেছে যে মুইভার নামে বিবৃতিটি তৈরি করেছেন তার দুই চীনা সহযোগী ফুন্থিং শিমরে এবং পামশিন মুইভা। সূত্রটি জানায়, ৯০ বছর বয়সী মুইভার শারীরিক অবস্থা ভালো নয় এবং সরকারের সাথে সাম্প্রতিক আলোচনার তিনি অংশ নেননি। তিনি বর্তমানে ডিমাপুরের হেবরন ক্যাম্পের নিজ বাসভবনে রয়েছেন।

পামশিন মুইভা গত ২০ সেপ্টেম্বর, এনএসসিএন-এর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হন।

এনএসসিএন-আইএম ১৯৯৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৯৭ সালে মুইভা এবং তার বন্ধু প্রয়াত ইসাক চিশি সু শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে “নাগা রাজনৈতিক সমস্যা” সমাধানের জন্য আলোচনায় যোগ দেন। ওই চুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল যে আলোচনাটি নিঃশর্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ পর্যায়ে, তৃতীয় দেশে এবং তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, এই নীতিমালার ভিত্তিতে ভারত সরকার এবং এনএসসিএন-এর মধ্যে ৬০০ রাউন্ডের বেশি রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে । ২০০২ সালে আমস্টারডামে স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কমিউনিককে নাগাদের অনন্য ইতিহাস এবং পরিস্থিতিকে স্বীকৃতি প্রদান এবং স্বীকার করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তিতে স্বীকার করা হয়েছে যে নাগা ইস্যুটি “দুটি সার্বভৌম সত্তার রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব”। কারণ এটি একটি “নতুন সম্পর্কের” মধ্যে “সার্বভৌম ক্ষমতা” ভাগ করার কথা বলে।

এনএসসিএন-আইএম নাগা পতাকা এবং সংবিধানকে স্বীকৃতি প্রদান এবং মেনে নিতে অস্বীকার করে ২০১৫ চুক্তির ধারা ও চেতনার সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য “কর্তৃপক্ষ এবং ভারত সরকারের নেতৃত্ব”কে অভিযুক্ত করেছে।

এনএসসিএন প্রতিবেশী আসাম, মণিপুর এবং অরুণাচল প্রদেশের নাগা-অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসরত ১২ লাখ নাগাকে নিয়ে ‘বৃহত্তর নাগাল্যান্ড’ বা নাগালিম গঠনের লক্ষ্যে সংগ্রাম করছে।