পাকিস্তান থেকে ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে মোট ৪০টি জেএফ-১৭ ব্লক-থ্রি জেট ফাইটার কিনতে যাচ্ছে মধ্য এশিয়ার দেশ আজারবাইজান। সবকিছু ঠিক থাকলে এটা হবে পাকিস্তানের জন্য এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় যুদ্ধবিমান রফতানি চুক্তি।
ব্লক-থ্রি হচ্ছে জেএফ-১৭ পরিবারের সর্বশেষ এবং সবচেয়ে উন্নত সংস্করণ। পাকিস্তান ও চীন যৌথভাবে এই ৪.৫-প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করেছে। বর্তমান বিশ্ব বাজারে এটি সবচেয়ে সাশ্রয়ী যুদ্ধবিমানগুলোর একটি।
২০২৩ সালে মধ্য এশিয়ার দেশটি ১৬টি জেএফ-১৭ তার বিমান বাহিনীতে যুক্ত করে। এখন ওই সংখ্যা বাড়িয়ে ৪০ করা হচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ ব্যাপারে ব্যাপক লেখালেখি হলেও, আজারবাইজান, পাকিস্তান বা চীনা সরকারের তরফ থেকে বিমান সংখ্যা বৃদ্ধির ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।
তবে খবরটি সত্যি হলে তা হবে পাকিস্তানের মহাকাশ শিল্পের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এটা হবে প্রতিরক্ষা শিল্প থেকে বিশ্বব্যাপী উচ্চ-মূল্যের চুক্তি করতে সক্ষম প্রতিযোগিতামূলক অস্ত্র রফতানিকারক হিসেবে দেশটির বিবর্তনের প্রতীক।
কামরায় অবস্থিত পাকিস্তান অ্যারোনটিক্যাল কমপ্লেক্স (পিএসি) এবং চীনের চেংদু এয়ারক্রাফ্ট ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপ যৌথভাবে জেএফ-১৭ থান্ডার প্রকল্প গ্রহণ করে। এটা এখন ইসলামাবাদের প্রতিরক্ষা কূটনীতি এবং শিল্প স্বায়ত্তশাসনের মাইলফলকে পরিণত হয়েছে।
আজারবাইজানের এই সম্ভাব্য মেগা-অর্ডার কেবল বিশ্বব্যাপী অস্ত্র বাণিজ্যে একটি বড় খেলোয়াড় হিসেবে পাকিস্তানকে স্বীকৃতি দিবে না বরং পিএসি-তে যথেষ্ট অর্থনৈতিক গতি সঞ্চার করবে। এর ফলে সামর্থ্য বৃদ্ধি এবং গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ সম্ভব হবে।
বিপরীতে, ভারতের তৈরি তেজাস জঙ্গিবিমান প্রযুক্তিগতভাবে অত্যাধুনিক দাবি করা হলেও এখন পর্যন্ত একটিও বিদেশী ক্লায়েন্টের দেখা পায়নি। মালয়েশিয়ার কাছে তেজাস রফতানির চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু এটি প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ কোরিয়ার এফএ-৫০ ব্লক-২০ যুদ্ধবিমানের কাছে হেরে যায়।
আজারবাইজান যদি সত্যিই জেএফ-১৭ সংখ্যা ৪০টিতে উন্নীত করে, তাহলে এটি হবে থান্ডার সিরিজের একক বৃহত্তম রফতানি। আর হবে পাকিস্তানের ইতিহাসে বৃহত্তম যুদ্ধবিমান রফতানি চুক্তি। ইতোপূর্বে নাইজেরিয়া ও মিয়ানমারের কাছে এই যুদ্ধবিমান বিক্রি করে পাকিস্তান।
আজারবাইজান ২০২৩ সালে ১৬টি জেএফ-১৭ ব্লক-থ্রি যুদ্ধবিমান নিজস্ব বাহিনীতে যুক্ত করে। প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের উপস্থিতিতে হায়দার আলিয়েভ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানগুলো হস্তান্তর করা হয়।
পুরানো রাশিয়ান মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানের বহর বদলে ফেলার জন্য আজারবাইজান জেএফ-১৭ সংগ্রহ করে।
ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া