স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের পদত্যাগ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের পদত্যাগ
রমেশ লেখক, ছবি: সংগৃহীত

নেপালে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। রাজধানী কাঠমান্ডুর বালুয়াটায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে তিনি পদত্যাগপত্র দেন।

ওই বৈঠক উপস্থিত ছিলেন এমন একজন মন্ত্রী জানান, বিক্ষোভে ১৯ জন নিহত ও চার শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার ঘটনায় নৈতিক কারণে রমেশ পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি।

ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ বন্ধের ঘোষণায় আজ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে সকালে বিক্ষোভ শুরু হয়। একপর্যায়ে কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের ব্যারিকেড টপকে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়।

পুলিশ জলকামান ও কাঁদানের গ্যাসের শেল নিক্ষেপের পাশাপাশি গুলি ছোড়ে। এতে কাঠমান্ডুতে অন্তত ১৭ জন এবং ইতাহারি শহরে ২ জন নিহত হন। চার শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

এর আগে নেপালের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গগন থাপা ও বিশ্ব প্রকাশ শর্মা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান। দলটির উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠক শেষে তাঁরা এ দাবি জানান। তাঁদের মতে, নৈতিক জায়গা থেকে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।

নেপালে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ বন্ধে রাখার সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয়। এর পর থেকে জনগণের মধ্যে সরকারবিরোধী ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে।

রোববার কিছু সাংবাদিক আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। তাঁরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় সরকারের হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেন।

এ পরিস্থিতিতে সোমবার সকাল ৯টা থেকে ‘হামি নেপাল’ নামের একটি সংগঠন রাজধানী কাঠমান্ডুসহ নেপালজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দেয়। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই তরুণ। অনেকের বয়স ৩০-এর কম, যাঁরা জেন-জি নামে পরিচিত। ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে যাঁদের জন্ম, তাঁদের জেনারেশন জেড বা জেন-জি বলা হয়।

বিক্ষোভকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন অ্যাপ বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের পাশাপাশি সরকারের দুর্নীতির সমালোচনা করেন। তাঁরা সরকারের জবাবদিহি ও সংস্কারের দাবি জানান।

দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট