রাশিয়া থেকে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র কিনতে চায় আফগান তালেবান

রাশিয়া থেকে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র কিনতে চায় আফগান তালেবান
রাশিয়ান পানজির-এস১ বিমান বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

মস্কোর সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্কের মধ্যে তালেবান রাশিয়ার সরঞ্জাম দিয়ে আফগানিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। মস্কো সাম্প্রতিক সময়ে ইয়েমেনের হুথি ও লেবাননের হিজবুল্লাহকে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাজি হলেও তারা তালেবানের ইচ্ছা পূরণে এগিয়ে আসবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

২০২৩ সালের গোড়ার দিকে মার্কিন বাহিনী চলে যাওয়ার পর থেকে দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে, তালেবানরা দেশের বাজেটের বড় অংশ প্রতিরক্ষার জন্য বরাদ্দ করেছে। এর লক্ষ্য বিমান প্রতিরক্ষা গড়ে তোলা বলে দেশটি জানায়।

তালেবান কমান্ডার এবং সেনাবাহিনীর প্রধান কারি ফসিহুদ্দিন ফিতরাত গত বছর রয়টার্সকে বলেছিলেন যে “তার দেশের বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োজন।”

তিনি আরো বলেন, “এতে কোন সন্দেহ নেই যে আফগানিস্তান এটি পাওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে,” তবে তালেবানরা কীভাবে এ ধরনে ক্ষেপণাস্ত্র লাভ করতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

গত ২৯ আগস্ট রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা তাস’র সাথে এক সাক্ষাত্কারে, আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের লজিস্টিক বিভাগের প্রধান জেনারেল সাইদ আব্দুল বাসির সাবেরি বেশ খোলামেলা কথা বলেন।

সাবেরি বলেন, “আমি মনে করি আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা এবং আকাশপথ নিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম দরকার। আমাদের স্থল সরঞ্জাম আছে। আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আপনার কাছ থেকে [এই ধরনের পণ্য] কিনব। এর জন্য [আন্তর্জাতিক আইনি] শর্তও আমরা মানব।”

“ভবিষ্যতে, আমরা রাশিয়ার তৈরি সরঞ্জাম কেনার পরিকল্পনা করছি যা আমাদের একটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়তে সাহায্য করবে,” তিনি যোগ করেন। “আমরা এই ধরনের অস্ত্র কিনতে চাই, কারণ তারা এই প্রযুক্তির দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশ।”

তালেবানরা এমন অনুরোধ করতে পারে তা মাত্র কয়েক বছর আগেও হয়তো অকল্পনীয় ছিল। কিন্তু সাবেরির বিবৃতি এমন সময়ে এসেছে যখন মস্কোর সঙ্গে কাবুলের সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে। যার উদাহরণ মে মাসে মস্কো গ্রুপটিকে সেন্ট পিটার্সবার্গ ফোরামে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।

রাশিয়া সম্প্রতি হুথিদেরকে জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং সিরিয়া হয়ে হিজবুল্লাহর কাছে একটি মাঝারি পাল্লার পানজির-এস১ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হস্তান্তর করার পর তালেবানদের কাছ থেকে এই বক্তব্য পাওয়া যায়।

তবে তালেবানদের পানজির বা বাক ও টরের মতো স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র সরবরাহ করা হলে তা নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রকে শঙ্কিত করবে। ২০২১ সালের আগস্টে সেনা প্রত্যাহার করার পর যুক্তরাষ্ট্র কাবুলের কেন্দ্রস্থলে ড্রোন হামলা চালিয়ে আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে হত্যা করে। তিনি সেখানে ছিলেন তালেবানদের অতিথি হিসেবে।

তালেবানদের হাতে উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা থাকলে এই ধরনের ড্রোন অপারেশনকে জটিল করে তুলতে পারে। গত মার্চে তালেবানরা অভিযোগ করে যে মার্কিন ড্রোনগুলো এখনো আফগানিস্তানের আকাশসীমা টহল দিচ্ছে এবং আকাশসীমা “লঙ্ঘন” করছে।

যেদিন সাবেরির সাক্ষাত্কার প্রকাশিত হয় সেদিনই ইরাকি বাহিনী কিরকুকের আকাশে একটি তুর্কি আকসুঙ্গুর ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে। দৃশ্যত পানজির-এস১ ব্যবহার করে ড্রোনটি ভূপাতিত করা হয়।ৎ

 

ফোর্বস থেকে অনুবাদ