ভারতীয় প্যারামিলিটারি গ্রুপ আসাম রাইফেলস ঠাণ্ডা মাথায় মিয়ানমারের ১০ প্রতিরোধ যোদ্ধাকে খুন করেছে বলে দাবি করেছেন মিয়ানমারের বেসামরিক জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী দা জিন মার অং।
তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত করতে পারি যে কোনও লড়াই হয়নি। তারা ভারতের নিরাপত্তার জন্য কোনও হুমকি তৈরি করছিল না।“
মঙ্গলবার এনইউজি’র এক বিবৃতিতে এই দাবি করা হয়েছে। ভারত সীমান্তের তামু জেলার পিপলস ডিফেন্স টিমের এসব সদস্যকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। বিবৃতিতে এই হত্যার ঘটনা তদন্তের জন্য ভারতের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মণিপুর রাজ্যে আসাম রাইফেলসের ১ নম্বর ব্যাটালিয়ন ১০ প্রতিরোধ যোদ্ধাকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। দলটি সীমান্তের কাছে তাদের অবস্থান ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে আগেভাগেই জানিয়েছিল।
এই হত্যাকাণ্ডকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য একটি কলঙ্কজনক ঘটনা উল্লেখ করে অং বলেন, এতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আমরা উদ্বিগ্ন। তাই সত্য উন্মোচন করা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষতি না করে এমনভাবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করছি এবং সর্বোত্তম সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তাদের আহ্বান জানাচ্ছি।
এনইউজি জানায়, ১৪ মে প্রতিরোধ যোদ্ধারা তাদের শিবির থেকে নিখোঁজ হয় এবং দুই দিন পর আসাম রাইফেলস তাদের লাশ প্রতিরোধ বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ প্রতিরোধ নেতাদের জোর করে একটি নথিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। এতে লেখা ছিল যে তাদের যোদ্ধারা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে আক্রমণ শুরু করে। যার ফলে পাল্টা আক্রমণে তারা মারা যায়। তারা ভবিষ্যতে কোনও সীমান্ত বেড়া নির্মাণের বিরোধিতা করবে না বলেও অঙ্গীকার নেয়া হয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড টুইটারে লিখে যে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১৪ মে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রিত প্যারামিলিটারি গ্রুপ আসাম রাইফেলস চান্দেল জেলায় “সশস্ত্র ক্যাডারদের” বিরুদ্ধে অভিযান চালায়।
ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো দাবি করে যে, নিহতদের কাছ থেকে সাতটি একে-৪৭ রাইফেল, একটি রকেট লঞ্চার, একটি এম৪ রাইফেল এবং চারটি একক ব্যারেল ব্রিচ-লোডিং রাইফেল, গোলাবারুদসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
হত্যার দায় গ্রহণ এবং নিহতদের পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এনইউজি। এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে তাও নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়। সীমানা নির্ধারণের আলোচনা শেষ হওয়া পর্যন্ত সীমান্ত বেড়ার কাজ স্থগিত রাখার জন্যও নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
অং বলেন, সীমান্ত বেড়ার কারণে তামুতে উত্তেজনা বেড়েছে। এনইউজি গত বছর বিষয়টি উত্থাপন করেছিল কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আন্তঃসীমান্ত অপরাধের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে বেড়া নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
দ্য ইরাবতী