মিয়ানমারে শান্তি মিশন পাঠাবে মালয়েশিয়া ও তার আঞ্চলিক মিত্রদেশগুলো

মিয়ানমারে শান্তি মিশন পাঠাবে মালয়েশিয়া ও তার আঞ্চলিক মিত্রদেশগুলো
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম (ডানে)। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক

শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য মিয়ানমারে একটি যৌথ প্রতিনিধিদল পাঠাবে মালয়েশিয়া ও কয়েকটি আঞ্চলিক দেশ। মালয়েশিয়া সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) পুত্রজায়ায় এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এ ঘোষণা দেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই মিশন পাঠানো হতে পারে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন–পীড়নের মুখে রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে বাংলাদেশ। এত বেশিসংখ্যক রোহিঙ্গার আশ্রয়স্থল হিসেবে কক্সবাজার হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থীশিবির।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের তিন দিনের মালয়েশিয়া সফরের সূচনায় রোহিঙ্গাদের জন্য এ উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানালেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা অবশ্যই একটি বড় অগ্রাধিকার। একই সঙ্গে দুর্ভোগে থাকা শরণার্থী এবং ভূমিকম্প–দুর্গত মানুষের জন্য দ্রুত মানবিক সহযোগিতাও প্রয়োজন।

বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে মালয়েশিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মিয়ানমার মিশন সমন্বয় করবেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই মিশন পাঠানোর কথা রয়েছে।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার ইব্রাহিম আরও বলেন, ‘বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীর ভরণপোষণে বাংলাদেশের ওপর যে বোঝা চাপানো হয়েছে, তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বসবাস। তাঁদের বেশির ভাগই মুসলিম। জাতিসংঘ বলেছে, ক্রমবর্ধমান সংঘাত এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত সহিংসতার কারণে গত ১৮ মাসে সংখ্যালঘু এই গোষ্ঠীর প্রায় দেড় লাখ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

অধ্যাপক ইউনূসের এই সফরে প্রতিরক্ষাসহায়তা, জ্বালানি, কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক শিক্ষা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে উচ্চশিক্ষা, কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ এবং হালাল ইকোসিস্টেম নিয়ে তিনটি নোট অব এক্সচেঞ্জ সই হয়েছে।

তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল সোমবার কুয়ালালামপুর পৌঁছান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে লালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। রয়টার্স

রয়টার্স