মানুষের বর্জ্য, খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার, রান্নাঘরের অবশিষ্টাংশ, ফেলে দেওয়া মই – কি নেই সেখানে?
মাউন্ট এভারেস্টে কর্মরত শেরপাদের প্রত্যেকে চার ঘন্টার হাইকিং করে, হিমবাহের বরফ এবং ভয়ঙ্কর ফাটল পারি দিয়ে ২০ কিলোগ্রাম করে এসব আবর্জনা বেস ক্যাম্পে ফিরিয়ে আনে।
এবারের পবর্তারোহন মৌসুমে দুটি বিশাল ড্রোন তাদেরকে সাহায্য করেছে। চার ঘন্টার পথ পারি দিতে ড্রোনগুলো সময় নিয়েছে ছয় মিনিট। বিশ্বের সর্বোচ্চ শিখরে জমে থাকা আবর্জনার স্তূপ পরিষ্কারের কাজে সহায়তা করছে এসব ড্রোন।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯ হাজার ৮৯৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এভারেস্টের ক্যাম্প-১ থেকে প্রায় ৭০০ মিটার নীচে বেস ক্যাম্পে আবর্জনা পরিবহনের জন্য ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছে। ড্রোনগুলো এমনভাবে ভার বহন করে যেন কেউ দঁড়ি বেধে উপরে টেনে তুলছে। শেরপারা হুকের সাহায্যে আবর্জনার ভর্তি ব্যাগে ঝুলিয়ে দিলে ড্রোন ফিরতি যাত্রা শুরু করে।
এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে, নেপাল-ভিত্তিক সংস্থা এয়ারলিফ্ট টেকনোলজি পরিচালিত ড্রোনগুলি ২৮০ কিলোগ্রামেরও বেশি আবর্জনা পরিষ্কার করেছে। এভারেস্টের ঢাল এতটাই আবর্জনায় ছেয়ে গেছে যে এটিকে এখন “বিশ্বের সর্বোচ্চ আবর্জনা ডাম্প” বলা হয়।
১৯৯০ সালের পর থেকে ৮ হাজার ৮৪৯ মিটার উঁচু এভারেস্টে আবর্জনার স্রোত দেখা দেয়। এসব সেখানে পবর্তারোহীদের ঢল নামে। আরোহণের মওসুমে হাজার হাজার মানুষ বেস ক্যাম্পে যান। যদিও প্রতি বছর মাত্র কয়েকশ মানুষ চূড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।
উচ্চ উচ্চতার ক্যাম্পসাইটগুলির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সেখানে পৌঁছানো বেশ কঠিন। ফলে আবর্জনা পরিষ্কার করা আরও কঠিন। ২০১৯ সাল থেকে নেপালি সেনাবাহিনী এবং শেরপারা পাহাড় এবং আশেপাশের বেশ কয়েকটি শৃঙ্গ থেকে ১০০ টনেরও বেশি বর্জ্য অপসারণ করেছে। গত দশকে, সরকার এমন নিয়মও করে যে বেস ক্যাম্পের উপরে যারা উঠতে চান তাদের প্রত্যেককে কমপক্ষে ৮ কিলোগ্রাম আবর্জনা বহন করে নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় ৪,০০০ মার্কিন ডলার জমা দিতে হবে।
ব্লুমবার্গ