বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে বাংলাদেশকে পশ্চিমমুখি হতে হবে

বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে বাংলাদেশকে পশ্চিমমুখি হতে হবে
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি চেংদু এফ-৭ ফাইটার জেট, ছবি: উইকিমিডিয়া

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে (বিএএফ) আধুনিকায়নের জন্য রাশিয়া ও চীনের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পশ্চিমের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার সময় এসেছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি এক্ষেত্রে সুযোগ নিয়ে এসেছে। পশ্চিমা প্রযুক্তিতে বিএএফকে সমৃদ্ধ করতে পারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নতুন সরকার। এতে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি শক্তিশালী হবে। বিএএফের বর্তমান উইপন সিস্টেম, যেমন ফাইটার, ইউটিলিটি হেলিকপ্টার এবং সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল রাশিয়া বা চীনের তৈরি। এগুলো কয়েক দশক পুরানো এবং তেমন নির্ভরযোগ্যও নয়।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ জোটনিরপেক্ষ নীতির উপর জোর দিয়ে আসছে। তাই উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিজেদের বলয়ে টেনে আনতে বেইজিং এবং মস্কো যে কৌশলগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সে ব্যাপারে ঢাকাকে সতর্ক থাকতে হবে। নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশকে নির্ভরতার ক্ষেত্রে রাশিয়া-চীন ও পশ্চিমের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রতিবেশী মায়ানমার সমরাস্ত্রের জন্য চীন, রাশিয়া ও ভারতের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল।

ঢাকা ইতিমধ্যেই তার আধুনিকীকরণ কর্মসূচি, ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ কার্যকর করার ক্ষেত্রে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আধুনিক বিমান পরিচালনায় বিএএফ-এর দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মীদের জীবনের ঝুঁকি হ্রাস এবং বাংলাদেশের সার্বভৌম আকাশসীমা বজায় রাখার জন্য এই কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়। এতে ন্যাটোর মতো সরঞ্জাম সংগ্রহ করে অস্ত্রাগারে বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।

চীন ও রাশিয়ান সরঞ্জামের জন্য বিএএফকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। ১৬টি রাশিয়ান ইয়াক-১৩০ ফাইটার-প্রশিক্ষন জেটের মধ্যে এক দশকেরও কম সময়ে চারটি বিধ্বস্ত হয়েছে, একজন পাইলটও মারা গেছে। ২০১৫ সালে চীন থেকে নতুন পাওয়া এফ-৭এমবি বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হওয়ার পর একজন পাইলট ‘নিখোঁজ’ হয়েছিলেন এবং তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। চীনা তৈরি ফাইটার এবং কে-৮ বা পিটি-৬-এর মতো বেসিক প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়া স্বাভাবিক  ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তন পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলো থেকে সমরাস্ত্র কেনার একটি সুযোগ এনে দিয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো এখন ঢাকার সঙ্গে কোন ধরনের চুক্তি করতে দ্বিধা করবে না। এটি একটি সুযোগ যা নেয়া উচিত।

দ্যা স্ট্রাটেজিস্ট