পেশীশক্তি বাড়াচ্ছে তুরস্ক: নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপনাস্ত্র প্রদর্শন

পেশীশক্তি বাড়াচ্ছে তুরস্ক: নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপনাস্ত্র প্রদর্শন

সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষের কারণে আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে চলতি সপ্তাহে ইস্তাম্বুল আন্তর্জাতিক অস্ত্র মেলায় বেশ কিছু  চমক হাজির করেছে তুরস্ক। এর মধ্যে রয়েছে কয়েক ধরনের আন্ত:মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য উন্নত অস্ত্র ।

তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প রোকেতসান আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং একটি হাইপারসনিক ক্ষেপনাস্ত্রসহ বেশকিছু নতুন সিস্টেম প্রদর্শন করে।

মিডিলইস্টআই-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আঙ্কারা বেশ কিছুদিন ধরে ‘তাইফুন’ সিরিজের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে আসছে তবে এবারই প্রথম এই ক্ষেপনাস্ত্রের হাইপারসনিক ভার্সন প্রদর্শন করা হয়, যা ‘তাইফুন ব্লক-৪’ নামে পরিচিত। ৭.২ টন ওজন এবং ১০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ১,০০০ কিলোমিটার বলে অনুমান করা হচ্ছে।

২২ জুলাই ‘তাইফুন ব্লক ৪’ উন্মোচন করার পর থেকে এটি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের ব্যালিস্টিক এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার এখনও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আলোচনার বিষয়।

ইরানের দুর্বল বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সত্ত্বেও, তেল আবিবসহ ইসরায়েলের গভীরে আঘাত করার জন্য এই অস্ত্র বেশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।

মেলায় রোকেতসানের জেনারেল ম্যানেজার মুরাত ইকিনসি বলেন, বর্তমান যুদ্ধক্ষেত্রে হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের গুরুত্ব অনেকাংশে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি তুর্কি সামরিক বাহিনীর শক্তি বহুগুণ বৃদ্ধি করবে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান গত মাসে বলেছিলেন যে তুরস্ক মাঝারি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ বাড়িয়ে তার প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করবে। এর আগে জানুয়ারিতে তিনি জনান যে মহাকাশ কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য সেনক নামে ২,০০০ কিলোমিটার পাল্লার একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে তৈরি করেছে আঙ্কারা।

প্রতিরক্ষা মেলায়, রোকেতসান এয়ার-লঞ্চড ৩০০ ইআর ক্ষেপণাস্ত্রও প্রদর্শন করে, যা যুদ্ধবিমান ও ড্রোনের মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে ছোঁড়া হলে ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বাঙ্কার বাস্টার বোমা — জিবিইউ-৫৭ এ/বি ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর হামলা চালায়।

মেলায় তুরস্ক এনইবি নামে পরিচিত নিজস্ব বাঙ্কার বাস্টার বোমা প্রদর্শন করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) বিভাগ এটি উদ্ভাবন করেছে।

আরঅ্যান্ডডি বিভাগের পরিচালক নীলুফার কুজুলু জানান, এটি উন্নয়নে দীর্ঘ ১২ বছর লেগেছে।

তিনি বলেন, আমরা সি৫০-গ্রেড কংক্রিট এবং ২২-মিলিমিটার রিবড স্টিল দিয়ে শক্তিশালী কংক্রিট ব্লকের উপর পরীক্ষা চালিয়েছি। আমাদের তৈরি এনইবি লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ৭ মিটার প্রবেশ করেছে। পরে, মূল কোরটি অতিরিক্ত ১.৫-টন কংক্রিট ব্লকের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায় এবং বালির গর্ত পর্যন্ত পৌঁছায় – এটি একটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং অর্জন।