পাকিস্তান থেকে ব্যালিস্টিক মিসাইল কিনছে বাংলাদেশ

পাকিস্তান থেকে ব্যালিস্টিক মিসাইল কিনছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাকিস্তান থেকে স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল (এসআরবিএম) সংগ্রহ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। এসব ক্ষেপনাস্ত্রের পাল্লা প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা একে দেশটির কৌশলগত ক্ষেপনাস্ত্র সামর্থ্য জোরদার প্রচেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বলে মনে করছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আধুনিকীকরণ প্রচেষ্টার অংশ এই উদ্যোগ। এর মাধ্যমে দেশটির প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি ও প্রতিরোধক শক্তিশালী হবে।

আলোচিত এরআরবিএম সংগ্রহ করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের কৌশলগত ও সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বাংলাদেশের আওতায় চলে আসবে। এতে এই অঞ্চলের পরিবর্তিত নিরাপত্তা পরিবেশে দেশটির অবস্থান জোরদার হবে।

পাকিস্তানের হাতে বাংলাদেশের চাহিদা পূরণ করতে পারে এমন বেশ কিছু মিসাইল সিস্টেম রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:

হাতফ-৪ (শাহিন-১)। এটি একটি কঠিন জ্বালানি-চালিত এবং ভ্রাম্যমাণ চরিত্রের ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা। এর পাল্লা ৩৫০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবহার করছে। এটি প্রচলিত এবং পারমাণবিক উভয় ধরনের ওয়ারহেড বহন করতে পারে। এর এডভান্স গাইডেন্স সিস্টেম ও ভ্রাম্যমাণ চরিত্রের কারণে এটি আঞ্চলিক প্রতিরোধক হিসেবে খুবই উপযুক্ত একটি ক্ষেপনাস্ত্র।

এছাড়া আছে, ২৯০ কিলোমিটার পাল্লার, কঠিন জ্বালানি-চালিত তবে ভ্রাম্যমাণ চরিত্রের আরেকটি ক্ষেপনাস্ত্র – গজনভী। এর ধ্বংস ক্ষমতা পরিক্ষিত এবং পাকিস্তানজুড়ে এটি মোতায়েন করা আছে। এর পাল্লা কম হলেও বাংলাদেশ প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে বা পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথভাবে এটি তৈরি করতে পারে।

বাংলাদেশ এসআরবিএম সংগ্রহ করলে তা দেশটির প্রত্যাঘাত করার ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে যাবে। তবে পাকিস্তানি মিসাইল সিস্টেম সংযোজন করতে হলে বাংলাদেশের বিদ্যমান ‘কমান্ড, কন্ট্রোল এন্ড কমিউনিকেশন’ অবকাঠামোতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে হবে বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সেক্ষেত্রে প্রযুক্তি হস্তান্তর, প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা নিয়ে দুই দেশ আলোচনা করতে পারে।

বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সম্পর্কের ইতিহাস তেমন সুখকর নয়। এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে এ ধরনের সহযোগিতা খুবই সীমিত পর্যায়ে। বাংলাদেশর সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে উপরোক্ত সম্পর্ক পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ক্ষেপনাস্ত্র নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনাকে অনেকে দুই দেশের মধ্যে খুবই বাস্তবসম্মত প্রতিরক্ষা সম্পৃক্ততা বলে মনে করছেন। এতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ক্রয়ে বৈচিত্র্য আসবে। তাছাড়া পশ্চিমা উৎস থেকে এ ধরনের ক্ষেপনাস্ত্র সংগ্রহ সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল।