আমেরিকার থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কুইন্সি এক বিশ্লেষণে লিখেছে, ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তির বিরোধীদের প্রভাব কেবল ওয়াশিংটনের নব্য রক্ষণশীল এবং ইসরাইলি লবির মধ্যেই সীমিত। মার্কিনীদের বাদ বাকি বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এমনকি ট্রাম্পের রিপাবলিকান ঘাঁটিও এই সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে। তেহরান টাইমস এই বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।
তেহরান টাইমস আরও লিখে, ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তির বিরোধীদের প্রতি আমেরিকার জনমত এমনকি রিপাবলিকানদেরও ব্যাপক সমর্থন নেই। সুতরাং ট্রাম্প যদি এই বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে উপেক্ষা করে তাহলে তাকে চরম রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে।
নব্য রক্ষণশীল এবং অবাস্তব দাবি
ওয়াশিংটন ও ইসরাইলের নব্য রক্ষণশীল এবং তাদের মিত্ররা চায় ইরান যেন তার পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বর্জন করে। বিশেষজ্ঞরা এই অবস্থানকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ এবং ‘বিষাক্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন। সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির জ্যেষ্ঠ গবেষক সিনা তুসি এ ধরনের চাওয়াকে ট্রাম্পের কূটনীতিতে নাশকতার প্রচেষ্টা বলে মনে করেন।
সমঝোতার প্রতি ব্যাপক সমর্থন
মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে দেখা গেছে ৬৯ শতাংশ আমেরিকানের মধ্যে ৬৪ শতাংশই রিপাবলিকান ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার লক্ষ্যে করা চুক্তিটিকে সমর্থন করে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা বিভ্রান্তিকর জরিপ প্রচারের মাধ্যমে জনমত বিকৃত করার চেষ্টা করছে।
ট্রাম্প সমর্থক গোষ্ঠী
স্টিভ ব্যানন এবং মার্জোরি টেলর গ্রিনসহ ট্রাম্প সমর্থক শিবিরের প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও ইরান-বিরোধী যুদ্ধবাজ মনোভাবের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। ট্যাকার কার্লসনও সতর্ক করে বলেছেন ইরানের সাথে যেকোনো ধরনের সংঘর্ষ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
আঞ্চলিক শক্তিগুলোর অবস্থান পরিবর্তন
সৌদি আরবসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য আঞ্চলিক মিত্র যারা ইতোপূর্বে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল, এবার তারা ইরানের সাথে ট্রাম্পের পরোক্ষ আলোচনাকে সমর্থন করছে। বিশ্লেষকরা এই পরিবর্তন সম্পর্কে বলছেন, উত্তেজনা বাড়তে না দেয়ার আকাঙ্ক্ষাই এর কারণ।
সামনের পথ: রাজনৈতিক ব্যয় ছাড়াই চুক্তি
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজস্ব বলয় ও জনমতের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে ইরানের সাথে এমন একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেন যা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ না করেও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধবাজরা কেবল তথ্য বিকৃত করে আলোচনা প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।