ওয়ারিয়র-এইট: বালুচ জঙ্গীদের প্রতি হুশিয়ারি

ওয়ারিয়র-এইট: বালুচ জঙ্গীদের প্রতি হুশিয়ারি

এবারের পাকিস্তান-চীনের যৌথ সন্ত্রাসবিরোধী মহড়ার লক্ষ্য ছিল বেলুচিস্তান প্রদেশে বেইজিংয়ের ৭০ বিলিয়ন ডলারের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পগুলো রক্ষায় স্থানীয় বিদ্রোহীদের হুশিয়ারি প্রদান। ওয়ারিয়র-এইট সাংকেতিক নামের এই মহড়া ২০ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে।

চীনের স্থলবেষ্টিত জিনজিয়াং প্রদেশের কাশগরকে সরাসরি পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের গোয়াদর বন্দরের সাথে সংযুক্ত করা চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) লক্ষ্য। এর আওতায় পাকিস্তানের নর্থ-সাউথ রোড ও কারাকোরাম হাইওয়ে আপগ্রেড করার কাজ চলছে। বেলুচি জঙ্গীরা এই প্রকল্পের জন্য হুমকি তৈরি করেছে।

সিপিইসি গোয়াদরের গভীর-সমুদ্র বন্দরকেও আধুনিকীকরণ করছে যাতে বড় বড় চীনা জাহাজ পারস্য উপসাগর থেকে তেল নিয়ে এসে এখানে ভিড়তে পারে। এতে জ্বালানি-স্বল্পতায় ভোগা চীনের জন্য পেট্রোলিয়াম পরিবহনের কাজটি অনেক সহজ হয়ে যাবে। বর্তমানে, চীনে তেল পরিবহনের জন্য জাহাজগুলোকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে পারস্য উপসাগর, আরব সাগর ও ভারত মহাসাগর পারি দিতে হয়।

চীনের পূর্ব উপকূল বন্দরগুলোতে পৌঁছানোর জন্য জাহাজগুলোকে অবশ্যই ঘনবসতিপূর্ণ মালাক্কা প্রণালীর মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যেখানে মার্কিন-সমর্থিত সিঙ্গাপুর এই সংকীর্ণ জলপথের উপর নজর রাখে। চীনে নোঙ্গর করার আগে জাহাজগুলোকে অবশ্যই দক্ষিণ চীন সাগর পারি দিতে হবে, যা একটি  আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শিপিং লেন। এখানকার দ্বীপ এবং সমুদ্রের তলদেশের সম্পদ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে।

তবে সিপিইসি হলে পারস্য উপসাগর থেকে তেলবাহী জাহাজগুলো আরব সাগরে এসে নোঙ্গর করবে এবং এরপর গোয়াদর বন্দর হয়ে স্থলপথে উত্তরে চীনের জিনজিয়াং-এ তেল পরিবহন করা হবে।

ওয়াশিংটন-ভিত্তিক নিউলাইনস ইনস্টিটিউট ১৪ নভেম্বর এক রিপোর্টে লিখে, “সিপিইসি’র কারণে চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে গভীর সম্পর্ক মার্কিন-পাকিস্তান সম্পর্ককে চাপে ফেলতে পারে। এই প্রকল্প ইসলামাবাদকে বেইজিংয়ের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে।

৩০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ হাইওয়ে এবং উপযুক্ত বন্দর ছাড়াও, গোয়াদরে সিপিইসি প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ, একটি লবনাক্ত পানি থেকে সুপেয় পানি উৎপাদন প্ল্যান্ট, একটি কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং শস্য, তেল ও তরল প্রাকৃতিক গ্যাস পরিবহনের জন্য কন্টেইনার বার্থ ও বাল্ক কার্গোর জন্য টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পন রয়েছে।

পাকিস্তান-চীন যৌথ মহড়ায় অংশ নিতে চাইনিজ পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) তার ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড থেকে ৩০০-এর বেশি বিশেষ অপারেশন, আর্মি এভিয়েশন এবং লজিস্টিক সাপোর্ট সৈন্য পাঠিয়েছে।

চীনের ওয়েস্টার্ন কমান্ড ভারতের সাথে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) এবং চীন-পাকিস্তান সীমান্ত পাহারা দেয় ।

এশিয়া টাইমস থেকে অনুবাদ