পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা নির্মাতারা তাদের বাণিজ্যিক রাজধানী করাচিতে এক অস্ত্র প্রদর্শনীতে স্থানীয়ভাবে তৈরি অত্যাধুনিক সামরিক হার্ডওয়্যার প্রদর্শন করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দেশটির লক্ষ্য আগামী পাঁচ বছর ধরে বছরে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র রপ্তানি।
১৯ থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত চার দিনব্যাপী দ্বিবার্ষিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে (আইডিইএএস ২০২৪) ৫৩টি দেশের ৩৩৩টি প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৫৫৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেন।
সবচেয়ে বেশি অংশ নেয় তুরস্ক থেকে ৩০টি অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
বর্তমানে, পাকিস্তানের অস্ত্র রপ্তানির তালিকায় রয়েছে ড্রোন, ট্যাঙ্ক, জেট এবং বিভিন্ন পদাতিক অস্ত্র। এগুলো বিশ্বের ৪০টি দেশে রফতানি হচ্ছে এবং এই খাত থেকে বার্ষিক আয় ২০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি। বেশিরভাগ অস্ত্র মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রফতানি হচ্ছে।
পাকিস্তান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আনাদোলুকে জানান যে ডিসেম্বর মাসে বিভিন্ন দেশের সাথে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তির স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।
বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে পাকিস্তানি অস্ত্র পণ্য, বিশেষ করে ড্রোন এবং ফাইটার জেটের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা।
পাকিস্তান এবং তুরস্ক ইস্পাত ও উৎপাদন খাতে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে।
দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের বিকাশ
পাকিস্তান বিশ্বব্যাপী অস্ত্রের বাজারে একটি অংশ দখল করার জন্য স্থানীয়ভাবে উন্নত ড্রোন, ফাইটার জেট, রাডার এবং ট্যাঙ্ক নির্মাণ করছে।
প্রদর্শনী চলাকালীন পাকিস্তান তার অত্যাধুনিক মানবহীন এরিয়াল ভেহিকেল (ইউএভি) উদ্বোধন করেছে।
পাকিস্তানের গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিফেন্স সলিউশনস (জিআইডিএস)’র তৈরি, শাহপার-থ্রি ড্রোনের উড্ডয়ন ক্ষমতা ৩৫,০০০ ফুট এবং এটি টানা ২৪ ঘন্টারও বেশি সময় উড়তে পারে।
এটি বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র এবং টর্পেডোসহ বহুরকম যুদ্ধাস্ত্র বহন করতে পারে।
নিজস্ব তৈরি হায়দার মেইন ব্যাটল ট্যাঙ্ক (এমবিটি), পিকে-৪৭ এবং স্নাইপার রাইফেল ছিল পাকিস্তানের অস্ত্র প্রদর্শনীতে নতুন সংযোজন।
পাকিস্তানের হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ ট্যাক্সিলা (এইচআইটি) এবং চীনা রাষ্ট্রীয় কোম্পানি নরিনকো-এর যৌথ উদ্যোগে তৈরি হায়দার ট্যাঙ্কটি এই বছরের মার্চ মাসে উন্মোচন করা হয়।
প্রদর্শনীতে ফ্রান্সের সাথে প্রযুক্তি চুক্তির আওতায় পাকিস্তানে নির্মিত আগোস্তা সাবমেরিনের মডেল, পাকিস্তান ও চীন যৌথভাবে তৈরি করা জেএফ-১৭ থান্ডার জেট এবং সুপার মুশশাক এয়ারক্রাফ্টও প্রদর্শন করা হয়।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি পার্ক-এর তৈরি কাস্টমাইজড টেইলর্ড অ্যান্টেনা সজ্জিত এসআর-থ্রিডি রাডারও আকর্ষণের ছিল কেন্দ্র।
স্থানীয়ভাবে তৈরি স্টিলথ লোটারিং যুদ্ধাস্ত্র, জিএম ৫০০ তোরাহ’র রপ্তানি আদেশ পাওয়ার আশা করছেন আয়োজকরা
আনাদোলু